My First Trek was caused by Strike in the year 1998! আমার প্রথম ট্রেকের কারন ছিল বন্ধ্!
বাস থেকে নেমে মায়ের হাত ধরে মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম “কতটা হাঁটতে হবে মা?” মা বলেছিল “এই যে কালো রাস্তাটা গাছের সারির ভেতর থেকে গিয়ে আকাশে মিশেছে, ওইখান পর্যন্ত!” এইভাবেই শুরু হয়েছিল আমার প্রথম ট্রেক (first trek)।
যতটা মনে পড়ে, তখন আমি তৃতীয় শ্রেণীতে(3rd stander) পড়ি। আট কি নয় বছর বয়স হবে। আমার বাবা তখন ম্যালেরিয়া জ্বরে ভবানিপুর পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি। বাবাকে দেখে মা আর আমি বাড়ি ফেরার জন্য বাসে উঠেছিলাম। কাকদ্বীপ যাওয়ার সরকারি ভুতল বাস।
ছোটবেলায় বাসে চড়াটা একটু আলাদা রকমেরই ভালোলাগা দিত। কালো লজেন্স, বাদাম, সবুজ মটর ভাজা আর লম্বা লম্বা পেপসি বরফ, এই ছিল আমার খাওয়ার বায়না।
বাসের জানালার ধারে বসে পেপসি খেতে খেতে বাইরের ঘরবাড়ি দেখা খুবই লোভনীয় একটা ব্যাপার ছিল। অনেকবার বকুনিও খেয়েছি চলন্ত বাসের জানালা থেকে হাত বাড়ানোর জন্য। বাসের গায়ের স্ক্রু -গুলকে বোতাম ভেবে টিপতাম আর ভাবতাম এইতো আমি বাস চালাতে পারি।
তো সেইবারে বাবার সাথে দেখা করার পর বাসে উঠে কাকদ্বীপ ফিরছি। যথারিতি আমার বাস ছোটানোর সুইচ টেপাটেপি চলছে। এই সুইচ চাপলাম বাস ছুটছে, লোক উঠবে সুইচ চাপলাম গাড়ি থামাতে হবে, পিঁ পিঁ পিঁ! আবার গাড়ি চলছে, স্পীড বাড়ানোর সুইচ! হু হু করে গাড়ি ছুটছে! বাইরের ঘরবাড়ি, গাছপালা অনেক স্পীডে পেছনে চলে যাচ্ছে। ওই দূরে মাঠ পেরিয়েই কাদের গ্রাম দেখা যাচ্ছে। মাঠের ওপারেই ঘন সবুজ গাছের লাইন। পিঁ পিঁ পিঁ! গাড়ি থামছে সুইচ চাপতে হবে! এই ব্রেক!
যা আর গাড়ি চলছেনা! শুনতে পেলাম বাসের কন্ডাক্টার চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলছে “ওদিকে আর গাড়ি যাবে না”।
– নিশ্চিন্তপুর –
দেখালাম লাইন দিয়ে সবাই বাস থেকে নেমে যাচ্ছে। তাহলে বাস কি খারাপ হয়ে গেল।
মাও আমাকে নিয়ে নেমে গেল। পিচের রাস্তার ধারে মাটিতে দাঁড়িয়ে আমি অবাক হয়ে দেখছি, বাসের সব লোক নেমে হাঁটতে শুরু করে দিয়েছে।
লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে মা জানতে পারল, বন্ধ্ চলছে আর বাস চলবে না। কোনও গাড়ি-ঘোড়া কিচ্ছু না।
আমি মা কে বারবার জিজ্ঞাসা করতে শুরু করলাম, কেন বাস যাবে না মা? তাহলে কি আমরা অন্য গাড়িতে যাব? ভ্যানে যাব? কোথায় এখন আমরা?
আরও অনেককিছুই হয়তো জিজ্ঞাসা করেছিলাম সেইসময় সব মনে নেই। কিন্তু, এটা মনে আছে পাশেরই কেউ একজন বলতে বলতে যাচ্ছিল-
“নিশ্চিন্তপুর থেকে কাকদ্বীপ! কম রাস্তা? একি জালা বল দেকি।”